ঘনীভবন কাকে বলে

ঘনীভবন কাকে বলে

যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্প গ্যাসীয় অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় পরিণত হয় তাকে ঘনীভবন বলে।

ঘনীভবন হল বাষ্পীভবনের বিপরীত প্রক্রিয়া। ঘনীভবন সাধারণত বায়ুর শীতলীকরণ ও বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত সম্পৃক্ত বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের কাছাকাছি এলে ঘনীভবন প্রক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

ঘনীভবন পদ্ধতি

প্রথমে সূর্যের তাপে উত্তপ্ত হয়ে নদী, পুকুর, সমুদ্রের জল জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়ে বাতাসে মেশে। তারপর এই জলীয়বাষ্প যুক্ত বাতাস হালকা হয়ে উপরে উঠে প্রসারিত হয় এবং উপরের শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে দ্রুত শীতল হয়। তারপর এই শীতল বায়ুর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে শিশিরাঙ্কে কাছে পৌঁছালে বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ছোট ছোট জলকণায় পরিণত হয়।

ঘনীভবনের বিভিন্ন রূপ

শিশির: মেঘমুক্ত রাতে যখন বায়ুমণ্ডল ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন বাতাসে উপস্থিত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে গাছের পাতায়, ঘাসের ওপর ছোট ছোট জলের ফোঁটা আকারে জমা হয় তাকে শিশির বলে।

তুহিন: যখন ভূপৃষ্ঠ এবং বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়। তখন বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত জলীয় বাষ্প দ্রুত ঠান্ডা হয়ে বরফকণায় পরিণত হয় এবং তখন এই বরফকণা ভূমি ভাগের উপর জমা হয় একে তুহিন বলে।

কুয়াশা: মেঘমুক্ত শীতল রাতে ভূপৃষ্ঠ এবং সংলগ্ন বায়ুস্তর যখন ঠান্ডা হয়ে যায় তখন বায়ুস্তরে থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জল কণারূপে ধূলিকণাকে আশ্রয় করে বাতাসে ভেসে বেড়ায় তাকে কুয়াশা বলে। 

মেঘ: ভূপৃষ্ঠ থেকে ঊর্ধ্বে বাতাসে ভেসে থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভবন উর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়ায় ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণার বা তুষারকণায় পরিণত হয়। বাতাসের চেয়ে হালকা হওয়ার কারনে এই জলকণাগুলি ধূলিকণাকে আশ্রয় করে আকাশে ভাসতে থাকে। আকাশে ভেসে থাকা জলবিন্দুর সমষ্টিকেই মেঘ বলে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন