বাচ্য কাকে বলে?

বাচ্য কাকে বলে

বাক্যের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশভঙ্গিকে বাচ্য বলে। বাচ্য শব্দের অর্থ হল 'কথনীয়' বা বলার 'যোগ্য'। আমরা কোনো একটি বাক্যকে বিভিন্নভাবে প্রকাশ করতে পারি। একই বাক্যকে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করলে বাক্যটির মূল বক্তব্য একই থাকলেও বিভিন্ন ভঙ্গি অনুসারে বাক্যে ক্রিয়াপদের রূপভেদ ঘটে। বাক্যের প্রকাশ ভঙ্গি বা বাচন ভঙ্গি অনুসারে কর্তা, কর্ম অথবা ক্রিয়ার প্রাধান্য নির্দেশ করে ক্রিয়ার রূপের যে পরিবর্তন ঘটে তাকে বাচ্য বলে।

প্রকারভেদ

বাংলা ভাষায় বাচ্যকে প্রধানত মোট চারটি ভাগ করা হয় : যথা- ১) কর্তৃবাচ্য, ২) কর্মবাচ্য, ৩) ভাববাচ্য এবং ৪) কর্ম-কর্তৃবাচ্য।

কর্তৃবাচ্য

ক্রিয়ার দ্বারা বাক্যে কর্তার প্রাধান্য রক্ষিত হলে যে বাক্য হয় তাকে কর্তৃবাচ্য বলে। কর্তৃবাচ্যে বাচ্যের প্রধান হলো কর্তা এবং কর্তার দ্বারা ক্রিয়ার কার্য সম্পন্ন হয়।

উদাহরণ:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'গীতাঞ্জলি' রচনা করেছেন।
করিম নাচ জানে।
সুমন কলকাতায় গিয়েছিলেন।

কর্মবাচ্য

যে সকল বাচ্যে কর্মই প্রধান বাক্যে ক্রিয়ার দ্বারা কর্তা অপেক্ষা কর্মের প্রাধান্য সূচিত হলে যে বাচ্য হয় তাকে কর্মবাচ্য বলে। 

উদাহরণ:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক 'গীতাঞ্জলি' রচিত হয়েছে।
চোরটিকে পুলিশের দ্বারা ধরা হয়েছিল ।
করিম দ্বারা এই কাজটি হয়েছে।

ভাববাচ্য

যে বাচ্যে ক্রিয়ার দ্বারা বাক্যের কর্তা বা কর্ম কোনোটিই প্রাধান নয় ক্রিয়া নিজেই বাক্যের মধ্যে প্রধান ভূমিকা পালন করে, সেই বাচ্যকে ভাববাচ্য বলে।

উদাহরণ:
কোন দিকে যাওয়া হবে।
তোমাকে হাঁটতে হবে।
তোমার বিদেশ যাওয়া হল না। 

কর্মকর্তৃবাচ্য

যে বাচ্যে কর্তার কোনো উল্লেখ থাকেনা, কর্মপদকেই কর্তা হিসেবে ধরা হয়, তাকে কর্মকর্তৃবাচ্য বলে।

উদাহরণ:
বাঁশতলায় মেলা বসেছে।
মাইকে সারা দিন ধরে গান বাজছে।
গাড়ি চলছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন