ঘূর্ণবাত কাকে বলে ? বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ

ঘূর্ণবাত কি? ঘূর্ণবাত কাকে বলে এবং ঘূর্ণবাতের প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন উত্তর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ঘূর্ণবাত কাকে বলে

ঘূর্ণবাত কাকে বলে 

কোন অল্প পরিসর স্থান কোনো কারণে হঠাৎ যদি খুব উষ্ণ হয়ে যায় তখন সেখানের বাতাস হালকা হয়ে ওপরে উঠে গিয়ে ওই স্থানে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি করে। ফলে বায়ুচাপের সমতা রক্ষার জন্য আশপাশের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু প্রবল বেগে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং উষ্ণ হয়ে পুনরায় ওপরে উঠে যায়। এরূপ কেন্দ্রমুখী প্রবল বেগসম্পন্ন বাতাসকে ঘূর্ণবাত বলে।

প্রকারভেদ

ভৌগোলিক অবস্থান এবং প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে, ঘূর্ণবাত গুলি প্রধান দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়: ১. ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত এবং ২. নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত 

নাতিশীতােষ্ণ ঘূর্ণবাত: যে ঘূর্ণবাত উচ্চ ও মধ্য অক্ষাংশে বা নাতিশীতােষ্ণ অঞ্চলে সৃষ্টি হয়, তাকে নাতিশীতােষ্ণ অঞ্চলের ঘূর্ণবাত বলে। এই ধরনের ঘূর্ণবাত সাধারণত তরঙ্গের আকারে সৃষ্টি হয় তাই একে তরঙ্গ ঘূর্ণবাতও বলে।

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত: ক্রান্তীয় অঞ্চলের জলভাগে যখন হঠাৎ নিম্নচাপের কেন্দ্র গঠিত হয়, তখন আশপাশের বাতাস দ্রুত গতিতে ঘূর্ণায়মান হয়ে সেই নিম্নচাপের দিকে ধাবিত হয় এবং একটি শক্তিশালী ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি করে। এই ধরনের ঘূর্ণবাতে সাধারণত ৬° থেকে ২০° উত্তর এবং দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে সৃষ্টি হয়।

বৈশিষ্ট্য

কেন্দ্রে নিম্নচাপের উপস্থিতি: ঘূর্নবাতের সমস্ত জায়গায় বায়ুচাপ অত্যন্ত কম থাকে। ঘূর্নবাতের কেন্দ্রে বায়ুর চাপ সর্বাধিক কম হয়। ঘূর্নবাতের কেন্দ্রস্থলে বায়ুচাপ সাধারণত ৮৫০ থেকে ৯০০ মিলিবারের মধ্যে হয়ে থাকে।

বায়ু প্রবাহের দিক: ঘূর্নবাতে বায়ু নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারপাশে ঘূর্ণন করে। উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে অর্থাৎ বামদিকে এবং দক্ষিণ গােলার্ধে ঘড়ির কাটার দিকে অর্থাৎ ডান দিকে ঘুরে প্রবাহিত হয়।

বায়ু প্রবাহের গতি: বায়ুর গতিবেগ ন্যূনতম ২০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় থাকে এবং এটি সর্বোচ্চ প্রতি ঘন্টায় ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

শীর্ষের উপস্থিতি: প্রতিটি ঘূর্নবাতের একটি কেন্দ্রীয় শীর্ষ থাকে, যদি শীর্ষ স্তর জেট বায়ু প্রবাহের সাথে যুক্ত হয়, তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সেই বায়ু প্রবাহের দিকনির্দেশ অনুসরণ করে।

চাপের পার্থক্য: ইহার কেন্দ্রের ও বহিঃসীমানার মধ্যে চাপের তারতম্য বিদ্যমান। এই পার্থক্যটি ঘূর্নবাতের তীব্রতা এবং শক্তির একটি প্রধান নির্ধারক।

দুর্যোগময় আবহাওয়া: ঘূর্নবাত যখন সক্রিয় থাকে, তখন আবহাওয়া দুর্যোগময় অবস্থায় থাকে।

কেন্দ্রমুখী বায়ু: ঘূর্নবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু আকর্ষিত হয়, অর্থাৎ বায়ু কেন্দ্রমুখী হয়ে প্রবাহিত হয়।

শক্তিলাভ: ঘূর্ণবাত তার শক্তি প্রাপ্তির জন্য লীনতাপ এবং জলীয় বাষ্পের উপর নির্ভর করে।

আরো পড়ুনঃ 

কথোপকথনে যোগ দিন