মিয়েন্ডার কাকে বলে? উদাহরণ ও বৈশিষ্ট্য

নদী বাঁক বা মিয়েন্ডার কাকে বলে Class 10 মিয়েন্ডার কী উদাহরণ নদী বাঁকের কোন দিকে ক্ষয় বেশি ঘটে তা আলোচনা করা হলো।
মিয়েন্ডার ছবি

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, আমাদের এই ব্লগে আপনাকে স্বাগতম, আজ, আমরা আলোচনা করবো নদী বাঁক বা মিয়েন্ডার কাকে বলে? নদী বাঁক কি মিয়েন্ডার কীভাবে সৃষ্টি হয়? মিয়েন্ডার উদাহরণ এবং নদী বাঁকের কোন দিকে ক্ষয় বেশি ঘটে ইত্যাদি তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক।

মিয়েন্ডার কাকে বলে

মিয়েন্ডার হলো নদীর গতিপথে একটি বাঁক। এগুলি সাধারণত একটি নদীর নিম্নগতিতে বা সমভূমিতে দেখা যায়, নদীর মধ্য প্রবাহে নদীর জলস্রোতের গতি হ্রাস পায় এবং নদী তার প্রবাহপথে অবস্থিত বাধাগুলিকে এড়িয়ে চলবার জন্য অনেক বড় বড় বাঁক নিয়ে এঁকে বেঁকে অগ্রসর হয়। এই বড়ো বড়ো বাঁক গুলিকে নদী বাঁক বা মিয়েন্ডার বলে। মিয়েন্ডার শব্দটি এসেছে। তুরস্কের নদী মিয়েন্ডারেস থেকে। তুরস্কের মিয়েন্ডারেস (Menderes) নদীতে অসংখ্য নদীবাঁক দেখা যায় তাই এই নদীর নাম অনুসারে পৃথিবীর সমস্ত নদীবাঁককে মিয়েন্ডার বলা হয়।

মিয়েন্ডার উদাহরণ

ভারতের গঙ্গা নদীতে প্রচুর মিয়েন্ডার দেখতে পাওয়া যায় যেমন গঙ্গা নদীর গতিপথে উত্তরপ্রদেশের বারানসীর কাছে এবং পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় নদীবাঁক বা মিয়েন্ডার দেখা যায়।

মিয়েন্ডার কিভাবে গঠিত হয়

যেখানে ভূমিরূপ তুলনামূলকভাবে সমতল।সেখানে নদীর জল প্রবাহ দ্বারা সৃষ্ট ক্ষয়জনিত এবং সঞ্চয়জনিত প্রক্রিয়ার ফলে মিয়েন্ডার গঠিত হয়। নদী যখন পার্বত্য প্রবাহ থেকে সমতল ভূমির উপর হতে বয়ে যেতে থাকে, তখন নদীর নিম্নস্তর পার্শ্বস্তরের থেকে বেশি হওয়ার ফলে নদীর উপত্যকা প্রশস্ত হতে থাকে। এই অবস্থায়, নদীর জলপ্রবাহের শক্তি ধীরে ধীরে কমে যায়। তার ফলে নদী তার প্রবাহপথে কোন বড় বাঁধার সম্মুখীন হলে নদী সেটি অতিক্রম করার পরিবর্তে বড় বড় বাঁক নিয়ে এগিয়ে চলে । নদীর এই বাঁকে জলস্রোত এসে সর্বপ্রথম নদী বাঁকের বাইরের দিকে আঘাত করে এর ফলে সেখানে ক্ষয়কার্য দ্রুত সম্পর্ন হয় এবং নদীর পাড় যথেষ্ট খাঁড়া হয়ে যায় । অন্যদিকে নদী বাঁকের ভিতরের দিকে জলস্রোত কম থাকায় সেখানে ক্ষয়কার্য সম্পর্ণ হয় না বরং সেখানে ক্ষয়প্রাপ্ত দ্রব্য সঞ্চয় হতে থাকে এভাবে ধীরে ধীরে উত্তল ঢাল ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং অবতল ঢাল আরও ঢালু হয়। ফলে, সময়ের সাথে সাথে নদী বাঁক গুলি আরও বড় আকৃতি ধারণ করে মিয়েন্ডার সৃষ্টি হয়।

মিয়েন্ডার এর বৈশিষ্ট্য

অবতল পাড় বা খাড়া ঢাল/পাড়: নদী বাঁকের যেদিকের পাড় নদীর জল স্রোতের আঘাতে ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে ভিতরে ঢুকে যায় সেই পাড়টিকে অবতল পাড় বা খাড়া ঢালু/পাড় বলে
উত্তল পাড় বা মৃদু ঢাল/পাড়: নদী বাঁকের যেদিকের অংশ সঞ্চয় কার্যের ফলে নদীর দিকে এগিয়ে যায় তাকে উত্তল পাড় বা মৃদু ঢাল/পাড় বলে।
পুল: অবতল পাড়ের দিকে নদী খাত বেশি ক্ষয় হওয়ায় সেখানে গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে পুল বলে।
রিফল: দুটি পুলের মধ্যবর্তী অংশের প্রবাহপথের অগভীর অংশকে রিফল বলে।
বাঁক গ্রীক: বাঁকের বহু দুটির মধ্যবর্তী সরু ফালি ভূমিকে বাঁক গ্রীক বলে।
মিয়েন্ডার অ্যামপ্লিটিউড: মিয়েন্ডার অ্যামপ্লিটিউড হল নদীর মাঝখান দিয়ে আঁকা একটি রেখার ওপরের দিকের উচ্চতম বিন্দু (crest) এবং নিচের দিকের নিম্নতম বিন্দু (Trough) এর মধ্যে দূরত্ব।
নদী বাঁক বা মিয়েন্ডার ফলে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন:

১টি মন্তব্য

You cannot reply to comments if the comment location is not embedded

  1. ৩০ মে, ২০২৪ এ ১১:০৭ AM
    Sera